সারসংক্ষেপ

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - প্রাথমিক বিজ্ঞান - জলবায়ু পরিবর্তন | | NCTB BOOK
8
8

দেখা গেলো যে, বিকার দিয়ে ঢেকে রাখা বরফখণ্ডগুলো খোলা বাতাসে রাখা বরফখণ্ডের তুলনায় আগে গলেছে। সূর্যের তাপ সহজেই বিকারের ভিতর প্রবেশ করতে পারে কিন্তু বিকার থেকে সহজে বের হতে পারে না। ফলে বিকারের ভিতর দ্রুত গরম হয়ে ওঠে। আর এটিই হলো গ্রিন হাউজ ধারণার মূল বিষয়। গ্রিন হাউজ হলো কাচের তৈরি ঘর যা ভেতরে সূর্যের তাপ আটকে রাখে। ফলে তীব্র শীতেও গাছপালা এই ঘরের ভিতর উষ্ণ ও সজীব থাকে।

গ্রিন হাউজ প্রভাব ও গ্রিন হাউজ গ্যাস

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলও গ্রিন হাউজের ন্যায় কাজ করে। বায়ুমণ্ডল হলো পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বায়ুর স্তর। বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প ও কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস গ্রিন হাউজের কাচের দেয়ালের মতো কাজ করে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে এবং ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়। রাতে ভূপৃষ্ঠ থেকে সেই তাপ বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে এবং ভূপৃষ্ঠ শীতল হয়। কিন্তু কিছু তাপ বায়ুমণ্ডলের ঐ গ্যাসগুলোর কারণে আটকা পড়ে। ফলে রাতের বেলায়ও পৃথিবী উষ্ণ থাকে। আর তাপ ধরে রাখার এই ঘটনাকেই গ্রিন হাউজ প্রভাব বলে। তাপ ধরে রাখার জন্য দায়ী এসকল গ্যাসই হলো গ্রিন হাউজ গ্যাস।

মানুষের কর্মকাণ্ড ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন

বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কলকারখানা ও যানবাহনে কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো হয়। এই জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুমণ্ডলে অনেক পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। পাশাপাশি বনভূমি ধ্বংসের ফলে গাছপালার মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণের হার কমছে। ফলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে। বেশি পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড বেশি করে তাপ ধরে রাখছে। ফলে দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াই হলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন।

বাস্তব ঘটনা থেকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন পর্যবেক্ষণ

তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি আমরা হিমালয় পর্বতমালার হিমবাহ গলনের হার থেকেও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারি। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে এবং সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

Content added By
Promotion